কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানায় গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত আসামীকে ছেড়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে স্বজনদের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ভৈরব থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনের বিরুদ্ধে।পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীকে না ছেড়ে কোর্টে প্রেরণ করায় স্বজনদের চাপে টাকা ফেরত দেন বলে সাংবাদিকদের বিষয়টি অবগত করেন ভুক্তভোগীরা।৬০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওসি মোহাম্মদ শাহিন।স্বজনরা জানান,মো: রুবেল মিয়া বাদী একটি রাজনৈতিক মামলায় গত ১২ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার পৌর শহরের চন্ডিবের গ্রামের মস্তু মিয়ার ছেলে সুজন মিয়াকে গ্রেফতার করে ভৈরব থানা পুলিশ।গ্রেফতার পর সুজনের স্বজনরা থানায় এসে কথা বললে ওসি ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন।পরে শ্রীনগর ইউনিয়নের যুবদল নেতা জাকির হোসেনের মাধ্যমে ৫৯ হাজার টাকা দেয়া হয় ওসি মোহাম্মদ শাহিনকে।কিন্তু টাকা নেয়ার পরও ওসি সুজনকে না ছেড়ে কিশোরগঞ্জ কোর্টে পাঠায়।ওসি কথা না রাখায় সুজনের স্বজনরা ওসির কাছে টাকা ফেরত চাইলে টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করে ওসি।এসময় স্বজনদের ওসি জানান, আসামীকে ছেড়ে দেয়ার জন্য টাকা নেয়নি,টাকা নিয়েছে অন্য মামলায় সুন-এরেস্ট দেখাবেনা এই মর্মে। তিন চার দিন ওসির পিছনে ঘুরে টাকা ফেরত না পাওয়ায় ভুক্তভোগীরা টাকা উদ্ধার জন্য দ্বারস্থ হন কিশোরগঞ্জ জেলা গণ অধিকার পরিষ্কার শাখার যুগ্ম আহবায়ক ও ভৈরব গণঅধিকার পরিষদের সংগঠক ইমতিয়াজ আহমেদ কাজলের নিকট।পরে ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল ওসি মোহাম্মদ শাহিনের সাথে ফোনে কথা বলেন এবং হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ করে ৫৯ হাজার টাকা নেয়ার ঘটনাটি সমাধান করতে বলেন।কিন্তু ওসি বিষয়টি নিয়ে আর কোন কথা বলেননি।বিষয়টি সমাধানের জন্য আজ বুধবার সকালে আবারও ম্যাসেজ দেন গণঅধিকার পরিষদের নেতা। পরে দুপুর ২টার দিকে ভুক্তভোগীর নিকট ইউনিয়ন যুবদল নেতা জাকিরের মাধ্যমে ৫৯ হাজার টাকা ফেরত দেন ওসি।টাকা ফেরত পেয়ে ভোক্তভোগীদের গণঅধিকার পরিষদের নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজলকে অবগত করার পর তার ফেসবুক আইডিতে ওসি ঘুষ ফেরত দেয়ার বিষয়টি পোস্ট করলে নেটিজেন ও ভৈরববাসীর নিকট সাড়া ফেলে।এনিয়ে কথা হয় গণঅধিকার পরিষদের নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজলের সাথে,তিনি জানান ওসি শাহিন দায়িত্ব নেয়ার পর একাধিক অভিযোগ আসে।ওইসব অভিযোগের পর্যাপ্ত প্রমাণিত না থাকায় কথা বলেননি।কিন্তু সুজনের স্বজনদের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ১৬ ডিসেম্বর,ওসিকে বিষয়টি অবগত করে সমাধানের জন্য।শেষ পর্যন্ত আজ বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগীকে টাকা ফেরত দেয়ার পর বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে ঘটনার বিস্তারিত পোস্ট করি এবং দুর্নীতিবাজ ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করি।এবিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী রাজু মিয়া জানান,বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার সময় ভৈরব বাজার থেকে সুজনকে গ্রেফতার করার পর স্বজনদের সাথে রাত ৮টার দিকে ৬জন লোক থানায় ওসির সাথে দেখা করি। আসামীকে ছাড়তে ওসির দাবিকৃত ৬০ হাজার টাকার মধ্যে জাকিরের মাধ্যমে ওইদিন রাত ১১টায় ওসির রুমেই ওসিকে ৫৯ হাজার টাকা ঘুষ দেয়া হয়।কিন্তু ওসি আসামিকে না ছেড়ে চালান করে।ওসি কথা না রাখায় ঘুষের টাকা ফেরত চায় ভুক্তভোগীরা।তখন ওসি বলেন, আসামি ছাড়ার জন্য টাকা নেয়নি,অন্য মামলায় সুন এরেস্ট না দেখানোর জন্য নিয়েছে টাকা।শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা থেকে ওসিকে ফোন করা হলে আজ বুধবার দুপুরের জাকিরের মাধ্যমে ৫৯ হাজার টাকা সুজনের ভাগিনা মুরসালিনের কাছে ফেরত দেন।এ ঘটনা জানাজানি হলে থানা থেকে ফোন করে আমাকে হয়রানি করছে পুলিশ।এবিষয়ে ভৈরব থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিন বলেন,এঘটনায় কোন টাকা নেয়নি।আসামি চালান দিয়েছি,টাকা নেয়ার প্রশ্ন উঠেনা।তিনি বলেন,তাঁর নামে অন্য কেউ যদি টাকা নিয়ে থাকে সে দায়িত্ব আমার না।
ভৈরব সার্কেলের এএসপি বলেন,ঘটনাটি শুনেছি।বিষয়টি তদন্ত করছি।