শহীদুল ইসলাম পলাশ,কিশোরগঞ্জ.
বর্ষা বহু আগে শেষ হয়ে গেলেও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে হাওরে প্রায় ২৯ হাজার হেক্টর কৃষিজমি থেকে এখনও পানি সরে না যাওয়ায় এলাকার শতাধিক কৃষক বিপাকে পড়েছেন। রবিশস্য ও বোরো চাষ নিয়ে কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা। কৃষকরা বলছেন,অক্টোবর মাসের ১ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত হাওর থেকে সাধারণত বর্ষার পানি নেমে যায়। এ সময় শুকিয়ে যাওয়া কৃষিজমিতে কৃষকরা বোরো ধানসহ বিভিন্ন রবিশস্যের আবাদ করেন। কিন্তু এ বছর নভেম্বর শেষ হয়ে গেলেও কৃষিজমি থেকে এখনো পানি নামেনি। ফলে রবিশস্য ও বোরো ধান রোপন নিয়ে খুবেই আশঙ্কায় আছেন এখানকার কৃষক।স্থানীয় কৃষিঅধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কিশোরগঞ্জের মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, ইটনা উপজেলার বিশাল হাওরজুড়ে প্রায় ৯৩ হাজার কৃষকের ৮০ হাজার ৮০৪ হেক্টর জমি আছে। এসব জমি থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩ লাখ ১৯ হাজার ৭৭৫ টন বোরো ধান উৎপন্ন হয়। কিন্তু এবার বিপুল সংখ্যক জমিতে এখনও পানি থাকায় ধানসহ রবিশস্যের উৎপানে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।মিঠামইনের ঘাগড়া ইউনিয়নের কৃষক হাকিম মিয়া বলেন, তাঁর পরিবার বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে হাওরে তাঁর ৫ একর জমি পানিতে ডুবে আছে। পানি না কমলে এ বছর বোরো চাষ করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে তিনি শঙ্কিত। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পানি না নামলে এবার বীজতলা করা সম্ভব না। তাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাতে হবে। গত বছর পাঁচ একর জমি থেকে ৪০০ মণ ধান পেয়েছিলেন। এবার কী যে হবে, আল্লাহই জানেন।একই কথা বললেন কৃষক হেলিম মিয়া ও জমসেদ মিয়া। তাদের দু’জনের ১৬ একর জমি রয়েছে হাওরে। তারাও বোরো জমি চাষাবাদের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। অষ্টগ্রাম সদর ইউনিয়নের কোনারবন্ধের কৃষক রোস্তম মিয়া, সবুজ মিয়া ও বাছির মিয়া জানান, তাদের ২১ একর জমি রয়েছে হাওরে। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে এ বছর এসব জমিতে চাষাবাদ করতে পারবেন কিনা চিন্তিত রয়েছেন।কলমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাধাকৃষ্ণ দাস জানান, তাঁর পাঁচ শতাধিক একর জমি রয়েছে হালালপুর ও ডুবাবিল হাওরে। দ্রæত পানি নামার ব্যবস্থা না করলে কৃষকের সর্বনাশ হয়ে যাবে। অনেক কৃষক এক ফসলের ওপর নির্ভরশীল। তাদের জীবিকার একমাত্র উপায় বোরো ফসল। পাশাপাশি রবিশস্যের ক্ষতি তো আছেই।কিন্তু কেন এ অবস্থা সে প্রসঙ্গে কৃষকরা বলছেন, হাওর থেকে প্রাকৃতিকভাবে পানি নামার ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। পূর্বদিকে মেঘনা ও পশ্চিমে ঘোড়াউতড়া নদীতে পানি নামার রাস্তায় পলি পড়ে হয়ে গেছে ভরাট। এ রাস্তা স্থানীয়ভাবে প্রতিদিন শত শত কৃষক নিজ উদ্যোগে খননের কাজ করে যাচ্ছেন। কোনো কোনো কৃষক নিরুপায় হয়ে অন্যান্য হাওরে বীজতলার ব্যবস্থা করে রাখছেন।এ বিষয়ে জানতে চাইলে অষ্টগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অভিজিৎ সরকার বলেন, জলাবদ্ধতা নিয়ে আমরাও এখন চিন্তিত। আমাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও বিষয়টি অবগত। নদীতে পলি জমার কারণে হাওর থেকে পানি নামছে না। বিএডিসিকে বলা হয়েছে, বিকল্প চ্যানেল খনন করে তারা পানি সরানোর ব্যাবস্থা করছে। এ বছর অষ্টগ্রামে ২৮ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১১ হাজার ১৪৭ টন। রবিশস্য আবাদ হবে ২ হাজার ৬৭১ হেক্টর জমিতে।
প্রধান উপদেষ্টা এডভোকেট মোহাম্মদ সাঈদুল হক সাঈদ শাওন
সম্পাদক ও প্রকাশক : এফ এম আব্বাস উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : ফাহমিদা ইয়াসমিন.
বার্তা সম্পাদক : মিজানুর রহমান.
মফস্বল সম্পাদক : মোঃ সজীব মিয়া.
ঠিকানা : এ এস গন্ধী প্লাজা ৪র্থ তলা জেলা স্বরণী মোড়,কিশোরগঞ্জ।
মোবাইল : ০৯৬৯৭৬৪৮০৩৫, ০৯৬৩৮৯২৩৫২৪,০১৬১৫৩১৮০৩৫
ই-মেইল : auchsangbad@gmail.com