মুবাহিলার ঘটনা সংঘটিত হয় হিজরী সনের ৯ম মাস জিলহজ্জ মাসের ২৪ তারিখে।এই দিনে নজরান শহরের কিছু খ্রিস্টান পণ্ডিত দয়াল রাসূল পাক (সাঃ) -এর সংগে বিতর্ক করে।নজরান শহরের ১৪ জন খ্রিস্টান পণ্ডিত দয়াল রাসূল পাক (সাঃ)'র সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়।বিতর্কের বিষয় ইসলামের সত্যতা।উভয় পক্ষে যুক্তি তর্ক চলতে থাকে।মদিনার বাইরে একটি মাঠে তর্ক অনুষ্ঠান চলতে থাকে।
খ্রিষ্টান প্রধান ও পণ্ডিতগণ পদ অনুযায়ী একপাশে দাঁড়িয়েছেন।অন্যপাশে মাওলা আলী,মা ফাতেমা,মাওলা ইমাম হাসান এবং ইমাম হুসাইন (আঃ) একত্রে দাঁড়িয়ে আছেন।খ্রিস্টানগণ তর্কে হেরে গিয়ে জিজিয়া কর দিতে সম্মত হন।রাসূলে খোদার পক্ষে মাওলা আলী খ্রিস্টানদের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তিতে সই করেন।বিষয়টি এমন, পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ্ এরশাদ করেছেন-অতঃপর আপনার নিকট যখন জ্ঞান (কুরআন) এসে গেছে,এরপরও যদি কেউ (খ্রিস্টান) আপনার সাথে তার (ঈসার) সম্বন্ধে তর্ক-বিতর্ক করে, তবে বলুন,(ময়দানে) এস, আমরা আহ্বান করি আমাদের পুত্রদের ও তোমাদের পুত্রদের, আমাদের নারীদের ও তোমাদের নারীদের এবং আমাদের সন্তানদের ও তোমাদের সন্তানদের; অতঃপর সকলে মিলে (আল্লাহর দরবারে) নিবেদন করি এবং মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষণ করি।
⇨ সূরা আল ইমরান,আয়াত -৬১।
ঘটনাটি এরূপ:
রাসূলে খোদা (সাঃ)-এর নবুওয়াতের সত্যতা যাচাই করার জন্য নাজরানের একটি খ্রিস্টান প্রতিনিধিদল মদীনায় আসল।তাদের সাথে আলোচনা ফলপ্রসূ হলো না। রাসূল (সাঃ) হযরত ঈসা (আঃ) সম্বন্ধে প্রতিনিধিদের বললেন যে, তিনি আল্লাহর পুত্র নন, বরং আল্লাহর মনোনীত নবী।
রাসূল (সাঃ) হযরত ঈসার জন্মের ব্যাপারে হযরত আদমের উদাহরণও দিলেন।কিন্তু তারা কোন কথাই শুনল না।অবশেষে তিনি আল্লাহর আদেশে পরস্পরের বিরুদ্ধে দোয়া ও মিথ্যাবাদীদের ওপর অভিশাপ বর্ষণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন,যাকে 'মুবাহিলা' বলে।স্থির করা হল যে, নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে উভয়ে নিজ নিজ পুত্রদের,
নারীদের (কন্যা সন্তানদের) এবং তাদের নিজেদের 'সত্তা' বলে গণ্য হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একত্র হবে এবং প্রত্যেকে অপরের প্রতি অভিসম্পাত ও আল্লাহর শাস্তি কামনা করবে।রাসূল পাক (সাঃ) মাওলা ইমাম হুসাইনকে কোলে নিয়ে মাওলা ইমাম হাসান (আঃ)-এর হাত ধরলেন এবং মা-ফাতিমাকে নিজের পেছনে, আর মাওলা আলী (আঃ)- কে তাঁর পেছনে রাখলেন।
অর্থাৎ ছেলেদের স্থানে তিনি নাতিদের, নারীদের স্থানে নিজ কন্যাকে এবং 'স্বত্তা' বলে গণ্যদের স্থানে মাওলা আলীকে নিলেন এবং দোয়া করলেন,'হে আল্লাহ!প্রত্যেক নবীর আহলে বাইত থাকে, এরা আমার আহলে বাইত।
এদের সকলদোষ-ত্রুটি হতে মুক্ত ও পাক-পবিত্র রেখ।
তিনি এভাবে ময়দানে পৌঁছলে খ্রিস্টানদের নেতা আকব তা দেখে বলল,'আল্লাহর কসম, আমি এমন নূরানী চেহারা দেখছি যে,যদি এ পাহাড়কে নিজ স্থান হতে সরে যেতে বলেন,তবে অবশ্যই সরে যাবে।সুতরাং তারা যে মিথ্যা বলেছে এটা তাদের ভিতরে ফুটে উঠেছে তাই ধ্বংস হওয়ার ভয়ে "মুবাহিলা" হতে হাত গুটিয়ে নেওয়াই কল্যাণকর মনে করে।অন্যথায় কিয়ামত অবধি খ্রিস্টানদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না।পরিশেষে তারা জিযিরা কর দিতে সম্মত হল।এটা মাওলা আলী (আঃ) এর একটি উঁচু স্তরের ফযিলত যে,তিনি আল্লাহর আদেশে রাসূলের 'নফস' (অনুরূপ স্বত্তা) সাব্যস্ত হলেন।জয় মাওলা আলীর জয়। জয় মোহাম্মদী ইসলামের জয়।
প্রধান উপদেষ্টা এডভোকেট মোহাম্মদ সাঈদুল হক সাঈদ শাওন
সম্পাদক ও প্রকাশক : এফ এম আব্বাস উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : ফাহমিদা ইয়াসমিন.
বার্তা সম্পাদক : মিজানুর রহমান.
মফস্বল সম্পাদক : মোঃ সজীব মিয়া.
ঠিকানা : এ এস গন্ধী প্লাজা ৪র্থ তলা জেলা স্বরণী মোড়,কিশোরগঞ্জ।
মোবাইল : ০৯৬৯৭৬৪৮০৩৫, ০৯৬৩৮৯২৩৫২৪,০১৬১৫৩১৮০৩৫
ই-মেইল : auchsangbad@gmail.com