ফখর উদ্দিন ইমরান,বিশেষ প্রতিবেদক
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে বাবার লাশ কবরে রেখে সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী আবনি নাসরিন পূর্ণ ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে।গত রোববার প্রকাশিত এসএসসির ফলাফলে এসব তথ্য জানা গেছে।তিনি কটিয়াদী পশ্চিম পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,আবনি নাসরিণ পূর্ণের এই অভূতপূর্ব ফলাফলে বিদ্যালয়ে তার সহপাঠী থেকে শুরু করে প্রধান শিক্ষক পর্যন্ত নজর কাড়ে এবং তার ফলাফলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করা হয়।গত রোববার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় আবনি নাসরিণ পূর্ণ জিপিএ-৫ পেয়েছে।তাছাড়া কটিয়াদী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সর্বমোট ৩৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে।এদের মধ্যে ৩৭৮ জন পরীক্ষার্থী পাশ করেছে।জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ৮০ জন এবং পাশেরর হার ৯৫.২১%।মেধাবী শিক্ষার্থী পূর্ণের সহপাঠীরা বলেন, আমাদের বান্ধবী পূর্ণ ক্লাসে খুবই মনোযোগী ছিল এবং তার স্মরনশক্তিও ছিল প্রকট।তাই পরীক্ষার পূর্বরাত্রিতে না পড়েও সকালে বাবার লাশ কবরে রেখে পরীক্ষা দিয়ে এবারের পরীক্ষায় সে অভূতপূর্ব ফলাফল করে।মেধাবী শিক্ষার্থী পূর্ণ জানায়,পরীক্ষার পূর্বরাত্রিতে আমার বাবা মারা যাওয়ায় আমি কিছুটা মনোবল হারিযে গিয়েছিলাম।কিন্তু আমার শিক্ষক, সহপাঠীর সমবেদনায় প্রাণ শক্তি ফিরে পেয়ে পরীক্ষায় খাতায় লিখে জিপিএ ৫ পেয়েছি।আশা করছি আমি আগামী দিনগুলোতে ভাল ফলাফল করে আমার বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারব।কটিয়াদী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম মাহফুজ নয়াদিগন্তকে বলেন,বাবার লাশ কবরে রেখে পরীক্ষা দেওয়া সেই শিক্ষার্থী আমার বিদ্যালয়ের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী।তার এই অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।পাশাপাশি সে শিক্ষা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যাতে ভাল ফলাফল করতে পারে সে কামনায় করি।উল্লেখ্য, উপজেলার কটিয়াদী বাজারের ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান দুদুমিয়া গত ২১ ফেব্রুয়ারী বুধবার দিবাগত রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বৃহস্পতিবার সকালেই দাফন সম্পন্ন হয়।ওই দিনই তার দ্বিতীয় মেয়ের এসএসসি ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা ছিল। বাবার মৃত্যুর শোক মাথায় নিয়েই ওই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়েছিল আবনি নাসরিণ পূর্ণকে।