সেলিম মাহমুদ গাজীপুর প্রতিনিধি।
গাজীপুরের শিল্পনগরী টঙ্গী বাজার শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দির পরিচালনা নিয়ে সনাতন সম্প্রদায়ের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে দুটি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্ধের জেরে সোমবার সকাল ১১ টায় মন্দির প্রাঙ্গনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।এতে সংগঠনে অ-গঠনতান্ত্রিক নিয়মে গত তিন বছর যাবৎ মেয়াদোত্তীর্ণ ও বির্তকিত মন্দির পরিচালনা কমিটির স্ব-ঘোষিত সভাপতি রঞ্জিত দাস ও সাধারণ সম্পাদক দেবেন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ক্ষমতা আকড়ে রাখা,ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে মন্দিরের একাংশে থাকা ১০ জনের বিরুদ্ধে গাজীপুর বিজ্ঞ জেলা জজ ২য় আদালতে মামলা করে হয়রানী করা, ভিন্ন ধর্মাম্বলীর লোকজন নিয়ে আধিপত্ত্য বিস্তার ও বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ তুলেন মন্দির পরিচালনার কমিটির একাংশ ও ভক্তবৃন্দ।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,১৯৮৩ সালে টঙ্গীতে হিন্দু জনকল্যাণ সমিতি গঠন করা হয়।পরে ওই সমিতির মাধ্যমে সনাতন সম্প্রদায়ের পূজাঅর্চনা করার জন্য ১৯৯৪ সালে টঙ্গীবাজার নদীর পাড়ে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়। ২০১০ সালে রঞ্জিত দাসকে সভাপতি এবং শ্যামল পালকে সাধারন সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ মন্দির পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়।পরে ৪ আগষ্ট ২০১৭ সালে রঞ্জিত দাসকে সভাপতি এবং দেবেন্দ্র দত্তকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট মন্দির পরিচালনা কমিটি, ২১ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি,২১ সদস্য বিশিষ্ট যুব কমিটি গঠন করা হয়।সে সময় মন্দির নির্মাণ কমিটি করার প্রস্তাব আসলেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রহস্যজনক কারণে সেই কমিটি গঠন না করে মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন।পরবর্তীতে ৪ আগষ্ট ২০২০ সালে উপরোক্ত কমিটিগুলোর মেয়াদ শেষ হলে উপরোক্ত দুই ব্যক্তি নতুন কমিটি প্রণয়ন এবং গঠনতন্ত্র বাস্তবায়ন না করে এমনকি নিয়মিত সাধারণ সভা না করে নিজেদের ইচ্ছে মতো কমিটি করার পায়তারা শুরু করে।এনিয়ে মন্দিরে দুটি পক্ষ সৃষ্টি হয়।এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বারস্থ হলে তারা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।কারণ রঞ্জিত দাস ও দেবেন্দ্র দত্তগং “বিচার মানি কিন্তু তালগাছ আমাদের” নীতিতে বহাল থাকেন এবং এক তরফা নিয়মনীতি উপেক্ষা করে মন্দির পরিচালনা করতে থাকেন।পরে পূজা উদযাপন পরিষদ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বিষয়টি প্রশাসনের হাতে ন্যাস্ত করেন।এক পর্যায়ে প্রশাসনের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের নিদের্শে টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার্স ইনচার্জ গত ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ ইং উভয় পক্ষকে শৃংখলা বজায় রেখে এবং উভয় পক্ষের লোকজনের সম্মতিক্রমে গঠনতন্ত্র প্রণনয় এবং ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করেন।কিন্তু রঞ্জিত দাস এবং দেবেন্দ্র দত্ত স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ,স্থানীয় আইনশৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার্স ইনচার্জকে মিথ্যা দোষারুপ এবং হরি সাধন পোদ্দার, দিপংকর ঘোষ,মহাদেব সাহা,অমল ঘোষ,সুভাষ সরকার,দুলাল দাস,ইন্দ্রজিত সাহা,রতন সরকার,নিতাই দাস,বিপুল দেবনাথকে অভিযুক্ত করে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে ১০ জনের বিরুদ্ধে গত ১৫ মে ২০২৩ ইং গাজীপুর বিজ্ঞ জেলা জজ ২য় আদালতে দে: মো: নং-৭২ রজু করে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন,মামলার বিবাদীরাসহ স্থানীয় সনাতন সম্প্রদায়ে শতাধিক ভক্ত-পূজারী।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ টঙ্গী পূর্ব থানার সাধারণ সম্পাদক অমল ঘোষ।এসময় মন্দির পূজারী ভক্তবৃন্দ ষড়যন্ত্র ও উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিত্বে আদালতে দায়েকৃত মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবী জানান।