পূবাইল (গাজীপুর)প্রতিনিধিঃ
গাজীপুর মহানগরের পূবাইলের ৪১ নং ওয়ার্ডে এবার ভোট লড়াইয়ে আ”লীগের ৫ জন লড়ছেন।বিএনপির কোন বিদ্রোহী অথবা বহিস্কৃত প্রার্থী হাইকমান্ডের নির্দেশে ভোট লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছেন না।
আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ৫ জনের সবাই মনোনয়ন প্রতীক পেয়ে জনসংযোগ করে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।এদের মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর বজলুর রহমান বাছির ঘুড়ি মার্কা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমান কাউন্সিলর মোমেন মিয়া লাঠিম মার্কা পেয়েছেন।গত ২০১৮ সালের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মিরের বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা আমজাদ হোসেন মোল্লা পেয়েছেন ঠেলাগাড়ি মার্কা,যুবলীগ নেতা আশরাফুল আলম মিষ্টি কুমড়া মার্কা ও স্থানীয় ৪১ নং ওয়ার্ডের আ’লীগ সভাপতি আলমগীর হোসেন খান টিফিনক্যারিয়ার মার্কায় মনোনয়ন পেয়েছেন।২৪টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার ভোট ও ৭ টি ভোট কেন্দ্রে প্রায় সমান সংখ্যক নারী পুরুষ ভোটার এবার তাদের কাউন্সিলর নির্বাচিত করবেন প্রথমবারের মতো ইভিএমের মাধ্যমে।পূবাইলের ৪১ নং ওয়ার্ডে বার বার নির্বাচিত হওয়ার ধারাবাহিকতা কেউ ধরে রাখতে পারেনি বলছেন এলাকাবাসী।২০১৩ সালের সিটির প্রতিষ্ঠাতা কাউন্সিলর ছিলেন বজলুর রহমান বাছির,২০১৮ সালে বর্তমান কাউন্সিলর কর্তব্যরত মোঃ মোমেন মিয়া।
ভোট ২৫ মে বৃহস্পতিবার আর মাত্র ৪ দিন বাকি। পূবাইল মেট্রোপলিটন থানার কাউন্সিলর প্রার্থীদের পদচারণায় সবচেয়ে আয়তনে বড় ৪১ নং ওয়ার্ডের অলি গলি,বাজার রাস্তা-ঘাট ব্যানার পোস্টারে ভরে গেছে। প্রচারণা চালাতে গিয়ে অনেকে সময় একে অপরের সামনাসামনি হয়ে লিফলেট আদান-প্রদান করছেন। প্রার্থীরা গণসংযোগে রাত দিন যার যার মার্কা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করছেন।সব মিলিয়ে ভোটের আমেজ বেশ জমে উঠেছে। চায়ের আড্ডায় কে জয়ী হয়ে ৪১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হবেন তার চুল-ছেঁড়া বিশ্লেষণ করছেন ভোটাররা।এলাকা ভিত্তিক ভোটের অংক কষে যার যার প্রার্থীকে আলোচনায় এগিয়ে রাখছেন সমর্থকেরা।তবে নির্বাচনী ইশতেহার অনেকেরই অভিন্ন।রাস্তাঘাট,কালভার্ট,ড্রেনেজ ব্যবস্থা,ল্যাম্পপোস্ট,মাদক নির্মুল,স্থানীয় আদালতে সঠিক বিচার করা,পরিচ্ছন্ন শহর নির্মাণ,মশকনিধনের প্রতিশ্রুতি সহ বিভিন্ন আশ্বাস প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।অন্যদিকে ৪১ নং ওয়ার্ড সহ পূবাইলের ভিবিন্ন স্থানে ডাকাতি চুরি বেড়ে যাওয়ায় অনেকে বলছেন আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে এলাকাবাসীকে সংঘবদ্ধ করে বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত করবে।দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণের জানমালের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিবে।
ভোটারেরা বলছেন সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে ৪১ নং ওয়ার্ডে প্রতিবারই নতুন মুখ আসছেন কাউন্সিলর পদে।কেউ-ই দ্বিতীয় বার বা বারবার নির্বাচিত হতে পারেননি।অর্থাৎ তাদের প্রত্যাশিত ও আকাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী।করোনা ও দু’দুবার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসায় কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।বিশেষ করে বিভিন্ন সরকারি ভাতা, ওএমসের আটা চাল,টিসিবির পণ্য বিতরণে কার্ড ইস্যুতে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন ভোটারেরা।রাস্তায় ল্যাম্পপোস্ট না দেয়া,রাস্তা সম্প্রসারণে সীমানা প্রাচীর ও ঘর বাড়ি ভাঙচুরে ক্ষতিপূরণ না পাওয়া,রাস্তা মেরামতে ধীর গতি।সব মিলিয়ে এবার নতুন নেতৃত্ব ও নতুন মুখের ইঙ্গিত দিচ্ছেন সাধারণ ভোটারেরা।তাই গতবারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আলহাজ্ব আমজাদ হোসেন মোল্লা, ৪১ নং ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি আলমগীর হোসেন খান ও যুবলীগ নেতা আশরাফুল আলমের মধ্যে ভোট যুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছে এলাকাবাসী ও সাধারণ ভোটারেরা।এবিষয়ে ৪১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আমজাদ হোসেন মোল্লা বলেন গত নির্বাচনে কীভাবে আমাকে হারানো হয়েছে তা সবাই জানে।এবার উন্নয়ন ও সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আমার ঠেলাগাড়িতে ভোট দিতে জণগণ ভুল করবেনা।আপনারা ২৪ টি গ্রাম ঘুরে দেখুন ঠেলাগাড়ি মার্কার জনপ্রিয়তা।আমি শতভাগ আশাবাদী আমার ঠেলাগাড়ি মার্কা জয়ী করবেন।টিফিন ক্যারিয়ার মার্কা পেয়ে আলমগীর হোসেন খান সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন সবচেয়ে অবহেলিত ৪১ নং ওয়ার্ডের উন্নয়নে আমার বিকল্প দেখছিনা।কীভাবে উপর থেকে বাজেট এনে কাজ করতে হয় সেটা আমি জানি। মিষ্টি কুমড়া মার্কা নিয়ে লড়ছেন যুবলীগ নেতা আশরাফুল আলম।এলাকাকে বদলে দেয়া ও পরিবর্তনের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন ৪১ নং ওয়ার্ডকে ঢেলে সাজাবো।বর্তমান কাউন্সিলর মোমেন মিয়া বলছেন অসমাপ্ত কাজগুলো করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবো।বজলুর রহমান বাছির বলেন আমার বিগত দিনের কাজই আমাকে কাউন্সিলর পদে ফিরিয়ে আনবে ভোটেরেরা।তবে জনগণের মতামত ভিন্ন।তিনি আরও বলেন,ভুলভ্রান্তি থাকতেই পারে।তবে আগামী বৃহস্পতিবার এলাকাবাসী ও ভোটারেরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন নতুন নিয়মে ইভিএমে ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে।