শাফায়েত নূরুল:
স্বপ্ন পূরণ এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে সুই-সুতো দিয়ে অনেক ডিজাইন করেন শাড়ি ও পোশাকসহ অনেক রকম ব্যবহার্য জিনিসে তৈরি করার পর।এসব ডিজাইনে তৈরি করা বস্তুগুলির ছবি তুলে শখ্য নামে একটি ফেসবুক পেজে পোষ্ট করেন। মুহূর্তের মধ্যে লাইক কমেন্ট আসতে থাকে ক্রেতা ও নিকট থেকে। আর এই শিল্পকর্মের কাজটি করেন কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের আত্মপ্রত্যয়ী রৌশন জাহান (শশী)।
তিনি তার শিল্পকর্মের গুনেই ক্রেতা মহলে শ্রেষ্ঠ সমাদৃত। তাকে অন্যান্য শিক্ষিত তরুণীরা অনুস্বরণ করলেও তারাও ঘর থেকে ডিজাইন করা পণ্য তৈরি করে এবং বিক্রি করে চলতে পারবে। ছোট বেলায় একমাত্র উপর্জনক্ষম বাবাকে হারিয়ে এক রকম শূণ্যতা অনুভব করলেও পড়ালেখা চালিয়ে যান রৌশন জাহান শশী। কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে ম্যানেজমেন্টে মাষ্টার্স পাশ করা শশী ঘরে বসে নেই। মেয়েদের জামার কাটিং থেকে সেলানো, হ্যান্ডপেইন্ট, হাতের ব্যাগ, রিবনের কাজ করে তিনি নিজের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে আসছে এবং পরিবারের কাছে তিনি অভিশাপ নয় বরং আর্শিবাদ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। মা জননী কাছ থেকে ছোটবেলায় সেলাইয়ে হাতেখড়ি দেখে দেখেই শিখে পেলেন সেলাইয়ের কাজ। পাকাপোক্ত হওয়ার জন্য ২০১৯ সনে নিকলী মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সুই-সুতোর ও ব্লকবাটিকের কাজ রপ্ত করেন শশী। মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা সে সময় তাকে বলেছিলেন- কাজগুলিকে সামনের দিকে এগিয়ে নাও, চলতে পারবে। বর্তমানে শশীর ডিজাইন করা জামা-কাপড়, ওয়ালমেট, মেয়েদের ব্যাগ ও মাস্কের ব্যাপক অনেক চাহিদা আছে। কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের নামকরা বস্ত্রের দোকানগুলো তার ডিজাইন করা পণ্যের চাহিদা রয়েছে।
অদম্য নারী উদ্যোক্তা রুকাইয়া ইসমাত তার শিল্পকর্মের গুনেই জেলা শহরের অনেক পরিচিত-অপরিচিতদের কাছ থেকে পণ্যের অর্ডার পান। স্বল্প পরিসরে তিনি বেশ কয়েকজন বেকার তরুণীদের হাতে কলমে কাজ শিখিয়েছেন এবং বিভিন্ন ক্রেতাদের অর্ডারের কাজগুলো তাদের দিয়ে করিয়ে থাকেন।
রৌশন জাহান শশী জানান, আমার ডিজাইন করার হরেক রকম পণ্য বিক্রি করে আমি চলতে পারি। আমার পরিবারের কাছে টাকার জন্য বলি না। চাকরি পেলেও এ কাজ চালিয়ে যাবো । আমার ভালো লাগা বিভিন্ন পণ্যের ডিজাইন করা এটা আমার নেশা। আমার মন যখন খারাপ থাকে তখন আমি হ্যান্ড পেইন্ট করি, ওয়াল পেইন্টিং করি, মন খারাপের সময় এগুলো করলে আমার মন ভালো হয়ে যায়। আমার একজন ভালো উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছে আছে। ব্যাপকভাবে এ কাজের প্রসার ঘটাতে চাই। আমাদের এদেশের মেয়েদের ডিজাইন করা পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এরকম আরো বেকার তরুণীরা এ কাজে অগ্রসর হলে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বস্ত্র আমদানী কিছুটা কমবে এবং দেশেই বেকার তরুণীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।