বাউফলে কনের মিথ্যা বানোয়াট মামলায় হয়রানি সহ দিশেহারা বর সহ পরিবার, বিচার দাবি।
শ্রীঃ মিশুক চন্দ্র ভুঁইয়া, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় কুমানুষের কুপরামর্শে কনে (মেয়ে) পরিবার কনেকে (মেয়েকে) বাদী করে মিথ্যা বানোয়াট সাজানো মামলায় হয়রানি ও ভোগান্তি সহ দিশেহারা বর (ছেলে) সহ পরিবার। এতে অনুসন্ধান করে পাওয়া গেছে রহস্য।
হয়রানি ভোগান্তি সহ দিশেহারা বর (ছেলে) পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে মাঠে নেমে জানা ও পাওয়া গেছে, মামলার বাদী কনের (মেয়ের) তালই মন্জু হোসেনের ঘটকালিতে উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে আজ থেকে গত ২৫/০৭/২০২২ তারিখে বিবাহ রেজিস্ট্রার ১২নং বাউফল ইউনিয়নের কাজী আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত বর (ছেলে) মোঃ সজিব হোসেন (২১), পিতা মোঃ কবির হোসেন, মাতাঃ মোসাঃ তাছলিমা বেগম, গ্রাম+ডাকঘর- বিলবিলাস, উপজেলা- বাউফল, জেলা- পটুয়াখালী এবং কনে (মেয়ে) মোসাঃ লাইজু বেগম (১৯), পিতা মোঃ সামসুল বেপারি, মাতাঃ মোসাঃ রাহিমা বেগম, গ্রাম- দক্ষিণ দিয়ারা কচুয়া, ডাকঘর- কালাইয়া, উপজেলা- বাউফল, জেলা- পটুয়াখালীকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করে কাবিন করা হয়। এবং উভয়ের কথা হয় এই চলতি নভেম্বর- ২০২২ তারিখ মাসে কনেকে (মেয়েকে) নববধূ সাজিয়ে ছেলের বাড়িতে আনুষ্ঠানিক ভাবে উঠিয়ে আনা হবে। কিন্তু তার অপেক্ষা না করে কুমানুষের কুপরামর্শে কনের (মেয়ের) পরিবার কনে (মেয়ে) মোসাঃ লাইজু বেগমকে বাদী করে পটুয়াখালী বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে বর (ছেলে) সজিব হোসেন, বরের (ছেলের) পিতা মোঃ কবির হোসেন, বরের (ছেলের) মাতা মোসাঃ তাছলিমা বেগমকে আসামি করে একটি যৌতুক মামলা করেন। মামলা করার পরই বর (ছেলে) সজিব হোসেন এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে সজিব আদালতে হাজির হয়ে জামিন আনেন। এবং আসামিদের আগামী ১লা ডিসেম্বর-২০২২ তারিখ আদালতে হাজির হওয়ার দিন ধার্য করা হয়।
এদিকে আরও জানা ও পাওয়া গেছে, কনে (মেয়ে) লাইজু বেগম বর (ছেলে) সজিব হোসেন এর সাথে বিবাহ হওয়ার আগে বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের কালাইয়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইউনুস খন্দকার, মাতা মোসাঃ লালবিবির ছেলে মোঃ হাফিজুর রহমানের সাথে বিবাহ হয়। পরে তার কয়েক মাস পর মোঃ হাফিজুর রহমানকে কালাইয়া বন্দর গরুহাট সংলগ্ন ফিরোজ মেম্বারের কাঠের আড়ৎ বসে কাজী গোলাম মোঃ মোস্তফা উপস্থিত হয়ে বর (ছেলে) ও কনের (মেয়ের) স্বাক্ষরিত এবং উভয় পরিবারের সম্মতিতে স্বাক্ষরিত ভাবে তালাক হয়। তখন বর (ছেলে) পক্ষকে চাপ সৃষ্টি করে কাবিনের টাকা নেয় কনে (মেয়ে) পক্ষ। কিন্তু দ্বিতীয় বর (ছেলে) সজিব হোসেন এর সাথে বিবাহ হওয়ার সময় তা গোপন রাখেন ঘটক, কনে (মেয়ে) ও তার পরিবার।
হঠাৎ বর (ছেলে) সজিব হোসেনের পরিবার গোপনে জানতে পারে কনে (মেয়ে) মোসাঃ লাইজু বেগমের আগে একটা বিবাহ হয়। তা জেনেও বরের (ছেলের) পরিবার মেনে নিয়ে কনেকে (মেয়ে) নববধূ সাজিয়ে উঠিয়ে নেওয়ার সমস্ত আয়োজন শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ বর (ছেলে) সজিব হোসেন এর বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা সহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারির পত্র আসলে তারা হয়রানি ভোগান্তি সহ দিশেহারা হয়ে বনে যান।
বর (ছেলে) সজিব হোসেন ও তার বাবা-মা জানান, আমরা জেনেছি কনের (মেয়ের) আরও একটা বিবাহ হয়েছে। তা কনের (মেয়ে) তালই উভয় পক্ষের ঘটক গোপন রাখেন। তারপরও তা মেনে নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কনেকে নববধূ সাজিয়ে উঠিয়ে নেওয়ার জন্য সকল আয়োজন শুরু করে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা, তা কেন কি কারণে জানিনা! কনেকে (মেয়েকে) এখন পর্যন্ত উঠিয়ে আনা হয়নি এবং কোনও প্রকার খাট, আলনা, আলমারি, স্বর্ণালংকার বা কোনও টাকা পয়সা আনা হয়নি বা তারাও দেয়নি এমনকি কোনও খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। আর কোনও প্রকার যৌতুকের টাকা দাবিও করা হয়নি। আমরা এই মিথ্যা বানোয়াট সাজানো মামলায় হয়রানি ভোগান্তি সহ দিশেহারা অবস্থায় আছি। আমরা এই মিথ্যা বানোয়াট সাজানো মামলা কারীদের বিচার দাবি করছি।
এদিকে কনে (মেয়ে) মোসাঃ লাইজু বেগমের তালই উভয় পক্ষের ঘটক মোঃ মন্জু হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করলেও তিনি রিসিভ করে কথা না বলায় কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধান সরেজমিনে কনে (মেয়ে) মোসাঃ লাইজু বেগমের বাবা মোঃ সামসুল বেপারির বাড়ির আশপাশের একাধিক নাম না বলা শর্তে লোকজন জানান, লাইজুর আরও একটা বিবাহ হয়েছিল। সেখান থেকে তালাক দিয়ে সজিব হোসেন নামে এক ছেলের কাছে বিবাহ দিয়েছে। এই নভেম্বর মাসেই উঠিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। তবে ছেলের বাড়িতে মেয়েকে উঠিয়ে দেওয়া হয়নি, এমনকি কোনও মালামালও দেওয়া হয়নি। যে মামলা দিয়েছে তা হয়তো কোনও কুমানুষের কুপরামর্শে দিয়েছে।
অনুসন্ধান সরেজমিনে কনে (মেয়ে) মোসাঃ লাইজু বেগম এর বাবা মোঃ সামসুল বেপারির বাড়ি সংলগ্ন অবস্থিত প্রাইমারি ও হাইস্কুল শিক্ষার্থীরা বলেন, লাইজু আপুর আরও একটা বিবাহ হয়। সেখান থেকে ছাড়িয়ে বাউফলে বিবাহ দিয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত উঠিয়ে দেয়নি তবে এই নভেম্বর মাসেই উঠিয়ে দেওয়ার কথা ছিল।
অনুসন্ধান সরেজমিনে মামলার ব্যাপারে জানতে কনে (মেয়ে) মোসাঃ লাইজু বেগম ও তার বাবা মোঃ সামসুল বেপারির বাড়িতে গেলে তাদের ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। এদিকে মামলার নথিপত্রে একটি মোবাইল নম্বর পাওয়া যাওয়ায় সেই মোবাইল নম্বরে কল করলে কনে (মেয়ে) ভাই ফোন রিসিভ করে কথা বলে। এসময় অনুসন্ধানকারী কনের সাথে ও তার বাবার সাথে কথা বলার জন্য চাইলে মোবাইল কল কেটে দেন।